পেঁয়াজের খোসায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জৈব ও পুষ্টি উপাদান থাকে, যা মাটির স্বাস্থ্যের উন্নতি ও ফসলের বৃদ্ধিতে সহায়ক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপাদানসমূহ হলো:
* ফ্ল্যাভোনয়েড (Flavonoids): এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
* কোয়ার্সিটিন (Quercetin): এটি ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং মাটির গুণাগুণ উন্নত করে।
* পটাশিয়াম (K): গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং ফুল ও ফলের সংখ্যা বাড়ায়।
* ফসফরাস (P): শিকড়ের বিকাশ ত্বরান্বিত করে ও গাছের শক্তি সরবরাহ করে।
* অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান: মাটির ক্ষতিকর জীবাণু ও ছত্রাক দমন করতে সাহায্য করে।
পেঁয়াজের খোসার ফসলের উপকারিতা:
* প্রাকৃতিক সার হিসেবে কাজ করে: মাটির পুষ্টি বৃদ্ধি করে, যা ফসলের বৃদ্ধি ও ফলন বাড়ায়।
* পোকামাকড় প্রতিরোধ করে: বিশেষ করে জাবপোকা ও থ্রিপসের আক্রমণ কমায়।
* মাটির ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক দমন করে: ফলে শিকড়ের পচন রোগ ও অন্যান্য মাটিবাহিত রোগ কম হয়।
* ফল ও ফুলের সংখ্যা বাড়ায়: বিশেষ করে সবজি ও ফুলগাছের জন্য উপকারী।
* জৈব পদার্থ সরবরাহ করে: মাটির উর্বরতা বাড়ায় এবং মাটির পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?
১. তরল সার (Onion Peel Fertilizer) তৈরি করে স্প্রে করা:
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
* ১ লিটার পানি।
* ১০০ গ্রাম পেঁয়াজের শুকনো খোসা।
তৈরি পদ্ধতি:
১. পেঁয়াজের খোসা ১ লিটার পানিতে ২-৩ দিন ভিজিয়ে রাখুন।
২. পরে খোসাগুলো ছেঁকে তরল সার আলাদা করুন।
৩. এই তরল সারের সাথে ১ লিটার পানি মিশিয়ে গাছের পাতা ও মাটিতে স্প্রে করুন।
৪. সপ্তাহে ১ বার স্প্রে করলে ফসলের বৃদ্ধি ও পোকা প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
২. কম্পোস্টের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার পদ্ধতি:
পেঁয়াজের খোসা কম্পোস্টের সাথে মিশিয়ে দিলে এটি ধীরে ধীরে পচে মাটিতে পুষ্টি সরবরাহ করবে।
বিশেষ করে টমেটো, মরিচ, ধনিয়া, পুদিনা, ফুলগাছ ও অন্যান্য সবজি গাছের জন্য ভালো।
৩. মাটিতে সরাসরি প্রয়োগ পদ্ধতি:
শুকনো পেঁয়াজের খোসা গুঁড়ো করে মাটির ওপরে ছিটিয়ে দিন।
এটি মাটির ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধ করবে এবং গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
Leave a Comment